বগুড়ায় বাসে কিশোরীকে ধর্ষণ নয়, ধর্ষণচেষ্টা: বেরিয়ে এলো ঘটনার মূল রহস্য

মোট দেখেছে : 516
প্রসারিত করো ছোট করা পরবর্তীতে পড়ুন ছাপা

ছবি প্রতিনিধি

বগুড়া প্রতিনিধি:

বগুড়ায় দূরপাল্লার যাত্রীবাহী ‘আর কে পরিবহন’-এর একটি বাসে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলেও, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন তথ্য। অভিযোগটি পরবর্তীতে ধর্ষণ নয়, ধর্ষণচেষ্টা হিসেবে মামলায় রূপ নেয়।

ঘটনার পর পুলিশ অভিযুক্ত বাসচালক সোহাইল হাসান শাকিব (২৬)-কে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) কিশোরীর ভগ্নিপতি বাদী হয়ে বগুড়ার শাজাহানপুর থানায় দুইজনকে আসামি করে ধর্ষণচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামলায় মুক্তিপণ দাবির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি, যা নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন ধোঁয়াশা।

পুলিশ ও মামলার তথ্য অনুযায়ী, ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরী ১৩ অক্টোবর সকালে ঢাকায় থাকা এক বন্ধুর সঙ্গে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কড্ডার মোড় থেকে বগুড়াগামী ‘আর কে পরিবহন এর বাসে ওঠেন।


দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাসটি বগুড়া শহরের বনানী মোড়ে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রী নেমে যান। তখন বাসচালক সোহাইল ও হেলপার সৈকত (২২) কিশোরী ও তার বন্ধুকে নামতে বাধা দেন। একপর্যায়ে তারা কিশোরীর বন্ধুকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নামিয়ে দিয়ে মেয়েটিকে বাসের ভেতরে আটকে রাখে।

চালক সোহাইল মেয়েটিকে পেছনের সিটে নিয়ে বোরকা খুলে ধর্ষণের চেষ্টা করে। চিৎকার করতে চাইলে তার মুখ চেপে ধরা হয়। পরে বাসটি শাজাহানপুর উপজেলার পর্যটন মোটেলের পশ্চিম পাশে একটি গাড়ি ওয়াশ ডকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আরও ২–৩ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি যোগ দিয়ে কিশোরীকে ভয় দেখিয়ে বলে, বিষয়টি কাউকে জানালে ক্ষতি করা হবে।

পরে তারা মেয়েটিকে ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ডে এনে ঢাকাগামী বাসে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মেয়েটি সাহস করে ‘আর কে ট্রাভেলস’ কাউন্টারে গিয়ে পুরো ঘটনাটি জানায়।

ঘটনার পর স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কিশোরীর সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে মালিকপক্ষ ও মোটরশ্রমিক নেতাদের মাধ্যমে পুলিশ কিশোরীকে হেফাজতে নেওয়ার পর সে বক্তব্য পরিবর্তন করে জানায়, তাকে ধর্ষণ নয়, ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

ভিকটিমের সঙ্গে থাকা এক যুবক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, এক বছর আগে ফেসবুকে মেয়েটির সঙ্গে পরিচয় হয়। আমাদের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। সেদিন বগুড়ার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। বাসের ড্রাইভার ও হেলপার আমাদের জিম্মি করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমাকে আলাদা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মুক্তি পাওয়ার পর মেয়েটি জানায়, তাকে ধর্ষণ করা হয়নি, বরং ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

বগুড়া জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সোমবার টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা এলাকা থেকে প্রধান আসামি সোহাইল হাসান শাকিবকে গ্রেফতার করে শাজাহানপুর থানায় হস্তান্তর করে। মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।


শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ভিকটিমের বন্ধুর সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি।

আরো দেখুন

সর্বশেষ ফটো