বগুড়ায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ৫শ বছরের মসজিদ ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে

মোট দেখেছে : 167
প্রসারিত করো ছোট করা পরবর্তীতে পড়ুন ছাপা

বগুড়া

স্টাফ রিপোর্টার:

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের হাজারকি গ্রামে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় পাঁচ শত বছরের পুরোনো এক মসজিদ। ছোট্ট আকার হলেও ইতিহাস আর ঐতিহ্যের ভারে আজও গৌরবে দীপ্ত এই স্থাপনাটি স্থানীয়দের কাছে পরিচিত আলিয়া মসজিদ নামে।

প্রায় ২৫ বছর আগে গ্রামবাসী একটি প্রাচীন পুকুরের চারপাশ পরিষ্কার করার সময় জঙ্গলের আড়াল থেকে ভেসে ওঠে মসজিদটির অবয়ব। দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে পড়ে থাকলেও গাছপালা আর মাটির স্তরের নিচে এটি ছিল অক্ষত। আবিষ্কারের পর থেকে মসজিদটি হয়ে ওঠে স্থানীয়দের কৌতূহল আর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।

মাত্র ১৩ ফুট লম্বা ও ১৩ ফুট চওড়া হলেও মসজিদের উচ্চতা প্রায় ২২ ফুট। একইসঙ্গে সাতজন মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন। পূর্ব দিকে রয়েছে তিন ফুট উঁচু একটি প্রবেশপথ। ভেতরে একটি ছোট মেহরাব এবং কোণায় সূক্ষ্ম কারুকাজ চোখে পড়ার মতো। বাইরের দেয়ালের কিছু অংশ ক্ষয়ে গেলেও ভেতরের ইটের গাঁথুনি ও গম্বুজ আজও শক্ত ও আকর্ষণীয়।



মসজিদটিতে কোনো নামফলক বা শিলালিপি নেই। ফলে এর নির্মাণকাল বা নির্মাতার নাম সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায়নি। তবে স্থাপত্যরীতি ও গঠন দেখে গবেষক ও স্থানীয়রা ধারণা করছেন প্রায় ৫০০ বছরের পুরাতন এটি মুঘল আমলের নিদর্শন।প্রাচীনত্ব ও গঠনের দৃঢ়তা প্রমাণ করে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম।

আলিয়া মসজিদ শুধু ধর্মীয় উপাসনালয় নয়, এটি এখন একটি ঐতিহাসিক পর্যটনকেন্দ্র, হিসেবে দেখছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক মানুষ আসেন মসজিদটি দেখতে। ইতিহাসপ্রেমী,গবেষক ও সাধারণ দর্শনার্থীর কাছে এটি এক অনন্য আকর্ষণ।

গ্রামবাসী মনে করেন, এই প্রাচীন স্থাপনাটি যথাযথ সংরক্ষণ ও সংস্কার করলে এটি দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন হিসেবে স্থান করে নেবে। তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। 

হাজারকি গ্রামের প্রবীণ মকবুল হোসেন বলেন,এমন মসজিদ গ্রামে থাকা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। সরকার যদি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়, তাহলে এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিতি পাবে।

উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, মসজিদটির সঠিক নির্মাণকাল কারও জানা না থাকলেও তারা বংশ পরম্পরায় শুনে আসছেন মসজিদটি জঙ্গলের ভিতর থেকে বের হয়েছে। মসজিদটির আনুমানিক বয়স ৫০০ বছর হবে। এ মসজিদটি অনেক ছোট কিন্তু এর ভেতর ও বাহিরে কারুকার্য গুলো অনেক সুন্দর,এটি সরকারি উদ্যোগে সংস্কার করা প্রয়োজন।

আরো দেখুন

সর্বশেষ ফটো